"Road to Success in Graduation Life !!"
ভাইগো/আপুগো,
যারা কদিন আগেই ডুয়েটে চান্স পেয়েছেন, সদ্য DUETian হয়েছেন, নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন, দেশের পাঁচটা ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটির অন্যরকম একটার একজন গর্বিত ছাত্র হিসেবে পরিচয় পেয়েছেন, বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছেন, তাদেরকে জানাচ্ছি উষ্ণ অভ্যর্থনা ও ফুলেল শুভেচ্ছা।
যারা কদিন আগেই ডুয়েটে চান্স পেয়েছেন, সদ্য DUETian হয়েছেন, নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন, দেশের পাঁচটা ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটির অন্যরকম একটার একজন গর্বিত ছাত্র হিসেবে পরিচয় পেয়েছেন, বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছেন, তাদেরকে জানাচ্ছি উষ্ণ অভ্যর্থনা ও ফুলেল শুভেচ্ছা।
ছবিঃ Welcome to New DUETian. |
কিন্তু আমার একটা কথা আছে।
অনেকেই বলবেন আমি কে??
আমার আবার কি কথা থাকতে পারে??
হ'রে ভাই, আমি কেউনা, কিন্তু আমার একটা কথা আছে। আমাদের আঞ্চলিকতায় একটা প্রবাদ আছে- "চাঁন দেইকলে কি বো, রোজা আক করাইবো !!"
অনেকেই বলবেন আমি কে??
আমার আবার কি কথা থাকতে পারে??
হ'রে ভাই, আমি কেউনা, কিন্তু আমার একটা কথা আছে। আমাদের আঞ্চলিকতায় একটা প্রবাদ আছে- "চাঁন দেইকলে কি বো, রোজা আক করাইবো !!"
ভাইগো/আপুগো,
সত্যিই চান্স পাইছেন তো কি অইছে? জানেন না, ডাইলের মজা তলে, আর ভার্সিটির মজাতো ক্লাস শুরু হইলে। সাহিত্যের ভাষায় আরেক্কান কতা আছে -" স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন !!"
কতাটা সত্য বানী চিরন্তনীর মতোই। চান্স পাইছেন, কিন্তু ক্লাস শুরু হইলে কইবেন - "লোভে পাপ, পাপে ইঞ্জিনিয়ার !!" বন্ধুদের কল দিয়ে কইবেন - "ছেড়ে দে মা কাইন্দা বাঁচি !!" সত্যিই এরকমি কইবেন, আল্লাহগো কবে যে এই জেলখানা থেকে বের হমু, এই জীবন আর ভালা লাগেনা। লাখ টাকার চাকরী লাগবেনা, কোন রকম ডিপ্লোমার সার্টিফিকেট দিয়ে ডাল-ভাত খাইতে পারলেই বাঁচি।
ছবিঃThis Post is for New DUETian. |
ভাইগো/আপুগো,
উপরের কথা গুলা শুনে খুব হাসি পাচ্ছে, তাইনা??
জি পাবেই, কিন্তু সেদিন বুঝবেন যেদিন ডুয়েট নামক কারাগারে ডুকবেন। ওকে, এসব বাদ। এবার আসি কারাগারে ডুকার পরেও কিভাবে সিরিয়াল কিলারের মতো হ্যাডম দেখাই চলা যায়, সুন্দর ও উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়া যায়, মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করা যায়।
ছবিঃ এখনি সময় নিজেকে নিয়ে ভাবার, ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করে। |
ভাইগো/আপুগো,
চান্স পাইছেন ভালো কথা, কিন্তু জানেন কি?? ক্লাস শুরু হতে আরো ৪-৫ মাস বাকী। কিন্তু দীর্ঘ ছয় মাস, একবছর, দুই বছর কেউবা তিন বছর গাধার খাটুনি খেটে চান্স পাইছেন। সত্যিই বলছি স্যালুট আপনাকে। এই যে এতোদিন কষ্ট করে চান্স পাইলেন- একবার ভেবে দেখুনতো আপনার ব্রেইন কেমন আছে?? ব্রেইনের ইপিসিয়েন্সি, ব্রেইনেই শার্পনেস কতোটা কার্যকর আছে।
ছবিঃ এখন থেকেই ভাবো, তুমি কি করবে, কিভাবে করবে? |
জানি, উত্তর আসবে অবশ্যই ভালো আছে, দারুন কার্যকর আছে, বুলেটের মতো উত্তর বাহির হয় মগজ থেকে, কত ইম্পোর্টেন্ট অংকের সূত্র, কত লজিক, কত শর্টকাট নিয়ম, কত অংকের উত্তর ও মুখস্থ আছে। যদি সত্যিই এরকম হয়, তবে অবশ্যই এটা বড় পাওনা।
এবার আসি আসল কথায়, এই যে ব্রেইন এতোটা প্রখর আছে, চান্স পাওয়ার পরেও কি এমন রাখতে চান কিংবা রাখা দরকার না? নাকি বাড়িতে গিয়ে চান্স পাওয়ার ঠেলায়, শিনা টান করে, শার্টের কলার উঁচিয়ে, প্রাইভেটে পড়ুয়া বন্ধুদের সাথে ভাব ধরে অযথা চা দোকানে আড্ডা দিয়ে ব্রেইনটাকে মরিচা ধরা অবস্থায় নিয়ে যেতে চান, বুলেটের মতো ব্রেইনটাকে, লোকাল ট্রেনের মতো ধীর করে ফেলতে চান??
ভাইগো/আপুগো,
চাইলে আপনি সেটা খুব অনায়াসেই পারবেন। কিন্তু সচল ও প্রখর থাকা ব্রেইনটাকে ঠিক ঠাক রাখতে চাইলে বাড়িতে নয় ঠিক যে জায়গায় (গাজীপুর) ছিলেন সে জায়গায় চলে আসুন, নয়তো ঢাকায় চলে যান। কিন্তু প্লিজ, বাড়িতে বসে থেকে, ঘুমাই ঘুমাই, হেলায় ফেলায়, ফেসবুক গুতাই, হুদাই ব্রেইনটা নষ্ট করবেন না।
ভাইগো/আপুগো,
আপনি যদি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর হয়ে থাকেন তাহলে অটোকেড, ড্রয়িং আর ডিজাইন শিখে নেন, নয়তো আপনাদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর যেটা কোর সাবজেক্ট বা যেটা না জানা থাকলেই নয় সেটা শিখে নিতে পারেন (প্র্যাকটিক্যালি)।
ভাইগো/আপুগো,
আপনি যদি ইইই'র হয়ে থাকেন, তাহলে রোবোটিকস শিখতে পারেন, বর্তমানে বাংলাদেশে রোবোটিকসের জগতে ডুয়েট'ই সেরা এবং অদম্য, আর এতে ইইই ডিপার্টমেন্টই এগিয়ে। নয়তো আপনাদের ইইই'র যেটা কোর সাবজেক্ট বা যেটা না জানা থাকলেই নয় সেটা শিখে নিতে পারেন(প্র্যাকটিক্যালি)।
ভাইগো/আপুগো,
আপনি যদি মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর হয়ে থাকেন তাহলে থ্রিডি ডিজাইন ভালো করে শিখে নিতে পারেন, নয়তো আপনাদের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর যেটা কোর সাবজেক্ট বা যেটা না জানা থাকলেই নয় সেটা শিখে নিতে পারেন(প্র্যাকটিক্যালি)।
ভাইগো/আপুগো,
আপনি যদি সিএসই ডিপার্টমেন্ট এর হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই এবং ফরজ কাজের মতো প্রোগামিং শিখে নিবেন, অবশ্যই 'অ, আ' মতো করে প্রোগ্রামিং সি টা সবার আগে শিখবেন। ইউটিউবে হাজার হাজার টিউটোরিয়াল (বাংলা ও ইংলিশে) পাবেন। আর যদি সি মোটামুটি পারেন বা ব্যাসিক জানা থাকে, তাহলে পাইথন টা শুরু করে দিন। প্রফেশনালি কাজ করার মানসিকতা তৈরি করেন।
ভাইগো/আপুগো,
আপনি যদি আর্কিটেকচার এর হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এবং অবশ্যই আপনাকে ডিজাইন শিখতে হবে, ডিজাইন না শিখলে আপনার আর্কিটেক্ট হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। ডিজাইনে পারফেক্ট না হলে আপনি ইয়ার লস খাইতে খাইতে আদু ভাই হয়ে যাবেন। সো এখন থেকেই শুরু করুন। সো প্র্যাকটিক্যালি এখনি ডিজাইন করা শুরু করে দিন।
বাকী রইলো আইপিই, ফুড, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর করনীয় কি? হ্যাঁ ভাইগো/আপুগো, এগুলোর ব্যাপারে আমার নূন্যতম আইডিয়াও নেই যে আমি আপনাদেরকে বলবো। এ ব্যাপারে অবশ্যই কোচিং এর বা কাছের বড় ভাইদের হেল্প নিবেন, আর তাতে করে আপনি অবশ্যই ভালো আইডিয়া পাবেন। দ্যান আপনিও সেই অনুযায়ী কাজ করবেন।
ভাইগো/আপুগো,
শেষবারের মতো অনুরোধ করছি, উপরের কিছু করেন আর না করেন। অন্ততপক্ষে ইংলিশে নিজেকে একটু দক্ষ করেন, ডুয়েট এর বদনাম গোছান, সাথে অন্যদের (চাকরি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সবাই জানে ডুয়েটিয়ানরা ইংলিশে দূর্বল) কাছে নিজেকে হেও করার সুযোগটাও বন্ধ করেন। এই ৪-৫ মাস সুযোগ করে স্পোকেন এবং পারলে রাইটিং এর কোর্সটা করে নেন। শুধু কোর্স করলে হবেনা, নিজেকে প্রচুর পড়তে হবে, প্রচুর ভোকাবলারি এবং সিনোনিমস শিখতে। ইংরেজি কনভারসেশন করার মতো কাউকে না ফেলে Hello English এবং BBC English নামে গুগল প্লে স্টোরে দুটি এপ্স আছে, এগুলা ইন্সটল করে নিজে নিজে প্র্যাকটিস করতে পারেন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজে নিজের সাথে ইংলিশে কথা বলেন, ইউটিউবে প্রচুর স্পোকেনের ভিডিও আছে সেগুলা দেখেন।
ভাইগো/আপুগো,
তাহলে আর দেরি কেনো?? বাড়িতে নয়, আড্ডায় নয়, হেলায় ফেলায় নয়। নিজের লাইফের সেরা সময় পরবর্তী চারটা বছর, এখনই প্লান করুন, এখনই ৪-৫ টা বন্ধু নিয়ে গ্রুপ তৈরি করুন, প্রোগ্রামিং, রোবোটিকস, ম্যাথ অলিম্পিয়াড, প্রজেক্ট আইডিয়া প্রতিযোগিতার জন্য নিজেকে তৈরি করুন।
আপনাদের এই ৪-৫ মাস কাটুক এডমিশনের মতো আরো একটা যুদ্ধ করে, কারো হেল্প না পাইলে গুগল থেকে হেল্প নিন, ইউটিউবে আপনার পছন্দের সার্চ অনুযায়ী হাজার হাজার টিউটোরিয়াল পাবেন, সেগুলা দেখুন। যে জিনিসটা মন থেকে করতে, শিখতে ভালো লাগে সেটা করুন। সময় নষ্ট না করে আরেকটা যুদ্ধে নেমে পড়ুন, আর এই যুদ্ধের ফলেই আপনি হতে পারবেন ডুয়েট তথা দেশের এবং বিশ্বের একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার।
ছবিঃ গর্বিত গ্র্যাজুয়েট, দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার, দেশ ও জাতির সম্পদ। |
একটা কথা মনে রাখবেন ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, যাহা ১০০% সত্য-
"If You Crazy, Everything is Easy. If You Lazy, Nothing is Easy !!
"If You Crazy, Everything is Easy. If You Lazy, Nothing is Easy !!
(সর্বোপরি আমি সিএসই ডিপার্টমেন্ট এর স্টুডেন্ট, তাই অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের এর মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালো আইডিয়া নাও থাকতে পারে, তবুও ঐসব ডিপার্টমেন্টে পড়ুয়া বন্ধুদের সাথে থেকে যা মনে হলো তাই বললাম, আপনারা ভালো করে জেনে নিবেন। আর প্রথমে কিছু কথা আঞ্চলিক ভাষায় লিখছি, বুঝে পড়লে বুঝবেন)।
Thanks AllSaifulläh Amïn
CSE 14th Batch, DUET.
No comments